অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : সৌদি আরবে অবস্থানরত প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গাকে পাসপোর্ট দিতে বা নবায়ন করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে বাংলাদেশকে। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী এনআইডিসহ যা যা লাগবে, সেগুলো দেখিয়ে যারা পাসপোর্ট পাওয়া ও নবায়নের যোগ্য, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ড. নাসের বিন আব্দুল আজিজ আল দাউদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করে। এসময় এসব প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে। রবিবার (১৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এ সময় তার সঙ্গে সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী উপস্থিত ছিলেন।
সৌদি স্বরাষ্ট্র উপমন্ত্রী ড. নাসের বিন আব্দুল আজিজ আল দাউদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দুই দিনের সফরে শনিবার বাংলাদেশে আসেন। প্রথম দিন তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সৌদি আরবে রোহিঙ্গারা তিন প্রজন্ম ধরে অবস্থান করছেন। পাকিস্তান আমল থেকে তারা সেখানে আছেন। বাংলাদেশ থেকে যেসব রোহিঙ্গা নিজেদের ম্যাকানিজমে বিশেষ বিবেচনায় গিয়েছিলেন তাদের বিষয়ে কী করা যায় সেটা তারা খতিয়ে দেখবেন। একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি আরও জোরদার করতে সৌদি আরবের সহযোগিতা চেয়েছি আমরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, একটা জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ হচ্ছে। এ কমিটিতে সৌদি আরবের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা থাকবেন। যখন যে সমস্যা সামনে আসবে সেটা তারাই সমাধান করবেন। তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করে দেওয়ার জন্যই কমিটি করে দেওয়া হচ্ছে। কমিটি যেটা মনে করবে এটা নবায়ন করে দিতে হবে।বাংলাদেশি পাসপোর্ট সম্পর্কে নিশ্চিত হলে সঙ্গে সঙ্গে তারা নবায়ন করে দেবে। কীভাবে যাচাই-বাছাই হবে তারাই ঠিক করবেন। আমরা আমাদের পাসপোর্টধারীদের প্রাধান্য দেবো। এর বাইরে কাউকে প্রাধান্য দেবো না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, উভয় দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান বাড়াতে ‘নিরাপত্তা সহযোগিতা’ এবং হজযাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে বৈঠকে ‘রোড টু মক্কা’ নামে দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। সৌদি প্রতিনিধি দল তাদের দেশে দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর ওপর জোর দিয়েছে। জবাবে আমরা জানিয়েছি, শ্রমিকদের দক্ষ করে তুলতে বাংলাদেশ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট গড়ে তুলেছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ব্যবস্থা সহজ করার অনুরোধ জানিয়েছি।
বর্তমানে সৌদি আরবে প্রায় ২৭ লাখ ৬০ হাজার বাংলাদেশি নাগরিক চাকরি ও ব্যবসাসহ বিভিন্ন পেশায় কাজ করছেন ও অবস্থান করছেন।
সাইবার সিকিউরিটি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সাইবার চ্যালেঞ্জ। সৌদি কর্তৃপক্ষও এটা মনে করে। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় যৌথভাবে কীভাবে কাজ করা যায় সেটা নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
এর আগে রবিবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে সৌদি স্বরাষ্ট্র উপমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলটি। প্রধানমন্ত্রী পরে অর্থ পরিশোধ করার শর্তে সৌদি আরবের কাছে তেল চেয়েছেন এসময়। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানেও সৌদি আরবের সহায়তা চেয়েছেন শেখ হাসিনা।
Leave a Reply